ময়মনসিংহ, ১২ অক্টোবর:
ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জুলাই যোদ্ধা আবু রায়হানকে হেনস্তার ঘটনায় পরিবহন শ্রমিক ও বৈষম্যবিরোধী সংগঠনের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে হঠাৎ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকে কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই বন্ধ হয়ে যায় ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর ও কিশোরগঞ্জসহ আশপাশের জেলার দূরপাল্লার বাস চলাচল। নগরীর মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, ইউনাইটেড ও সৌখিন পরিবহনের প্রায় ৩০০ গাড়ি টার্মিনালেই থেমে আছে। গন্তব্যে যেতে না পেরে বিপাকে পড়েন অফিসগামী যাত্রী থেকে শুরু করে নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।
পরিবহন শ্রমিকদের দাবি, সম্প্রতি একটি ঘটনার পর শ্রমিক অরুণকে জেলে পাঠানো হয় এবং কয়েকটি বাস জব্দের দাবি ওঠে, যা তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য হুমকি। এ কারণে তারা রোববার সকাল ৮টার পর থেকে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা এবং রাজনীতিমুক্ত পরিবহন ব্যবস্থার দাবিতে অনশন ও ধর্মঘটে নামেন।
ঢাকাগামী এক যাত্রী আবু তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“গতকাল থেকে ঢাকায় যাওয়ার চেষ্টা করছি, কিন্তু বাস না চলায় যেতে পারছি না। এভাবে হঠাৎ করে বাস বন্ধের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অন্তত বাসস্ট্যান্ডে যেন রাজনীতি না ঢোকে, এটা আমাদের দাবি।”
ইউনাইটেড পরিবহনের চালকের সহকারী সোহেল রানা বলেন,
“বাস বন্ধ থাকলে আমরা না খেয়ে থাকি। তবে এবার যৌক্তিক কারণেই বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। শ্রমিকের জীবিকা জড়িত ১৬টি বাস জব্দের দাবি মানা সম্ভব নয়।”
হেনস্তার শিকার আবু রায়হান বলেন,
“প্রশাসন ও শ্রমিক নেতাদের আশ্বাসে আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। তবে এরপরও ইউনাইটেড ও সৌখিন পরিবহনের বাসগুলো মাসকান্দা থেকে চলাচল শুরু করেনি। যদি যাত্রীদের দুর্ভোগ চলতে থাকে, তাহলে আমরা আবারও আন্দোলনে নামবো।”
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম বলেন,
“একটি পক্ষ এনসিপির কয়েকজনকে সামনে রেখে ঘটনাটিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে। গতকাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমিনুল হক শামীম পরিচালিত ১৬টি বাস বন্ধের পাশাপাশি একটি মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে ঢাকার নেতারা এই সিদ্ধান্ত মানতে রাজি নন।”
তিনি আরও জানান, ঢাকার নির্দেশেই ইউনাইটেড ও সৌখিন পরিবহনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে এবং বিভাগীয় চার জেলা ও কিশোরগঞ্জ থেকেও বাস চলাচল বন্ধ আছে। শ্রমিকদের মূল দাবি হলো, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আটক শ্রমিক অরুণের মুক্তি।
সারসংক্ষেপ:
- হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ
- মাসকান্দায় জুলাই যোদ্ধাকে হেনস্তার জেরে দ্বন্দ্ব
- যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে
- শ্রমিকদের দাবি: নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ











