আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ৯ অক্টোবর ২০২৫ | পিয়ংইয়ং
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন শুক্রবার এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে ক্ষমতাসীন কোরিয়ান ওয়ার্কার্স পার্টির উত্তরাধিকার ও আদর্শের প্রশংসা করেছেন এবং দেশের জনগণকে সমাজতান্ত্রিক আদর্শের প্রতি নবায়িত আনুগত্য প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন। এই ভাষণটি এসেছে পার্টির ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের ঠিক আগে।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ (KCNA) জানায়, কিম পিয়ংইয়ংয়ে পার্টির প্রতিষ্ঠাতা জাদুঘর পরিদর্শনের সময় দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের সামনে এই বক্তৃতা দেন।
পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ঐতিহ্যের গুরুত্ব
ভাষণে কিম জং উন তার প্রয়াত দাদা ও উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং, এবং অন্যান্য জাপানবিরোধী বিপ্লবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন:
“তারা আমাদের পার্টির শক্ত ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। বর্তমান প্রজন্মের দায়িত্ব হচ্ছে সেই সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য পূরণে তাদের বিপ্লবী কর্তব্য পালন করা।”
তিনি আরও বলেন, পার্টির আদর্শিক বিশুদ্ধতা রক্ষা করা এবং দলের ঐতিহ্যকে “ক্ষয় ও বিবর্ণতা ছাড়াই” ধরে রাখা বর্তমান প্রজন্মের কর্তব্য।
বিদেশি প্রতিনিধিদের উপস্থিতি
উৎসবে চীন, রাশিয়া ও ভিয়েতনাম থেকে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছেন:
- চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং,
- রাশিয়ার ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ,
- ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান তো লাম।
বিশেষ করে, তো লামের সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরা হচ্ছে, কারণ দুই দশকের মধ্যে এটাই কোনো ভিয়েতনামি কমিউনিস্ট নেতার প্রথম উত্তর কোরিয়া সফর। সূত্র জানায়, সফরে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।
কূটনৈতিক বার্তা
গত মাসে কিম জং উন চীনে একটি সামরিক কুচকাওয়াজে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পাশে দাঁড়ান। বিশ্লেষকদের মতে, এটি ছিল কিমের কূটনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করার একটি কৌশলগত পদক্ষেপ।
সামরিক কুচকাওয়াজের সম্ভাবনা
এখনও নিশ্চিত হওয়া না গেলেও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, উত্তর কোরিয়া এই সপ্তাহে একটি সামরিক কুচকাওয়াজ আয়োজন করতে পারে, যা ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে হয়ে থাকে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানায়, কুচকাওয়াজের প্রস্তুতির স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে।
বিশ্লেষণ
বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন এই পারমাণবিক ক্ষমতাধর রাষ্ট্রটি এ ধরনের বার্ষিকীকে কেবল একটি ঐতিহাসিক উদযাপন হিসেবে নয়, বরং ভিতরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখার কৌশল ও আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নিজেদের অবস্থান জোরদারের উপলক্ষ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।
তা ছাড়াই” ধরে রাখা বর্তমান প্রজন্মের কর্তব্য।











