রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা আদায়ের পরিকল্পনায় হত্যা করে লাশ ২৬ টুকরা করেছেন তার বন্ধু জরেজুল ইসলাম ও তার প্রেমিকা শামীমা আক্তার ওরফে কোহিনুর (৩৩)।
শনিবার কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব–৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন।
কীভাবে গড়ে ওঠে ‘প্রেমের ফাঁদ’?
র্যাব জানায়, প্রায় এক মাস আগে শামীমা ফোনে আশরাফুলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরিকল্পনা ছিল—অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে ১০ লাখ টাকা আদায় করা। এই টাকার ৭ লাখ নিতেন জরেজ, আর ৩ লাখ পেতেন শামীমা।
ঢাকায় এনে খুন
১১ নভেম্বর রাত ৮টায় আশরাফুল ব্যবসায়িক পাওনা আদায়ের জন্য বন্ধু জরেজকে নিয়ে রংপুর থেকে ঢাকায় আসেন। ১২ নভেম্বর তিনজন শনির আখড়ার নূরপুর এলাকায় ৫৫০০ টাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন।
ওইদিনই শামীমা মালটার শরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে আশরাফুলকে অচেতন করেন। এরপর বাইরে থেকে জরেজ তাদের ‘অন্তরঙ্গ দৃশ্য’ ভিডিও করেন। পরে আশরাফুল পুরোপুরি অচেতন হয়ে পড়লে জরেজ তার হাত বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেন। ইয়াবার প্রভাবে উত্তেজিত হয়ে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
মৃতদেহ ২৬ টুকরা
১৩ নভেম্বর সকালে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে জরেজ দুটি ড্রাম ও একটি চাপাতি কিনে লাশ ২৬ টুকরায় কাটে। পরে সিএনজি ভাড়া করে ড্রাম দুটি হাইকোর্টের সামনের এলাকায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
পরদিন সিআইডি আঙুলের ছাপ বিশ্লেষণে নিশ্চিত হয়—মরদেহটি নিখোঁজ ব্যবসায়ী আশরাফুল হকের।
গ্রেপ্তার শামীমা, পলাতক জরেজও ডিবির হাতে
১৪ নভেম্বর কুমিল্লার লাকসাম থেকে শামীমাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার দেওয়া তথ্যে শনির আখড়ার একটি বাসা থেকে রক্তমাখা পায়জামা-পাঞ্জাবি, দড়ি, স্কচটেপ ও অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়।
পরে ডিবি পুলিশ রংপুর থেকে মূল আসামি জরেজুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করে।
এটা কি কেবল ব্ল্যাকমেইল, নাকি আরও কিছু?
র্যাব বলছে—শামীমার প্রাথমিক স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাদের উদ্দেশ্য ছিল শুধু ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করা। তবে হত্যার পেছনে অন্য কোনো শত্রুতা আছে কি না, তা জানতে জরেজকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
তথ্যসূত্র-ঢাকা পোষ্ট











