নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ অবস্থায় দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি নভেম্বরের শুরুতেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশের লক্ষ্যে কাজ করছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে একাধিক জরিপ ও মাঠপর্যায়ের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যেসব এলাকায় অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে, সেসব জায়গায় সমন্বয়ের জন্য প্রার্থীদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নির্বাচন ও প্রার্থী বাছাই ইস্যু সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায়। বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি একক প্রার্থীর জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন।
স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, বিএনপি দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হওয়ায় প্রতিটি আসনেই একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। প্রায় প্রতিটি আসনে ৫ থেকে ১২ জন পর্যন্ত প্রার্থী সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এখনই সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা গেলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে একক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে পারবেন বলে দলের অভিমত।
বিএনপি নেতারা মনে করছেন, তফসিল ঘোষণার আগে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করলে দলীয় ক্ষোভ-অসন্তোষও কাটানো সম্ভব হবে। মনোনয়ন চূড়ান্তের আগ পর্যন্ত প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে।
স্থায়ী কমিটির আলোচনায় বলা হয়, অক্টোবরের মধ্যে তালিকা চূড়ান্ত করা না গেলে নভেম্বরের শুরুতেই সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করতে হবে। আন্দোলনের মাঠে যারা সক্রিয় ছিলেন এবং এলাকায় জনপ্রিয়—তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশও এসেছে নেতৃত্বের পক্ষ থেকে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “একটি আসনে ১০-১২ জন প্রার্থী থাকতে পারে, কিন্তু মনোনয়ন একজনই পাবেন। সবাইকে ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। দল ক্ষমতায় এলে বঞ্চিতদের মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে।”
জোট ও সমমনা দলের প্রার্থীদের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। জানা গেছে, বিএনপি ইতোমধ্যে জোটের পক্ষ থেকে পাওয়া ২৪৪টি আসনের প্রস্তাব বিবেচনা করছে। তবে জনপ্রিয় প্রার্থী থাকলে কেবল সেই আসনেই জোটকে ছাড় দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, “এলাকায় সর্বাধিক জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থীরাই মনোনয়ন পাবেন। তৃণমূল ও জনগণের প্রতিক্রিয়া যাচাই করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি মনোনয়নকে ঘিরে বিশৃঙ্খলা না করার নির্দেশ দেন এবং দল ঘোষিত প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজের আহ্বান জানান।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, নভেম্বরের শুরুতেই সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর নির্বাচনী মাঠে তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় কার্যক্রম জোরদার করার পরিকল্পনা রয়েছে।










