নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা
রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে শনিবার দুপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুনে গার্মেন্টস পণ্য, ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল এবং আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের শিপমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগুনে শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়নি, গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের কাঁচামালও পুড়ে গেছে। বিশেষ করে ক্যান্সারসহ জীবনরক্ষাকারী ওষুধের কাঁচামাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় স্বাস্থ্য খাতে মারাত্মক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ব্যবসায়ীরা জানান, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট ৮ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করতে পারছিল না, যার মধ্যে আগুন পুরো কার্গো ভিলেজে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ধোঁয়ার কুণ্ডলী এখনও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী মো. বেনজির বলেন, “হংকং ও চায়না থেকে আসা রেডিমেড গার্মেন্টসের শিপমেন্ট আগুনে পুড়ে গেছে। স্যাম্পল প্রোডাক্টও ধ্বংস হয়েছে। আমাদের ক্ষতি লাখ পাঁচেক টাকা হলেও ছোট ব্যবসায়ীর জন্য এটি বড় ধাক্কা।”
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস ‘কিউইপি-এক্সপ্রেস’-এর কর্মী মো. সাইদ হোসেন জানান, আগুন লাগার সময় ভিতরে প্রচুর পরিমাণ কেমিক্যাল ও গার্মেন্টস পণ্য ছিল। তিনি বলেন, “৪৫টি আন্তর্জাতিক কুরিয়ার কোম্পানি এখানে অপারেশন চালায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মালামাল এখন ধ্বংসপ্রায়।”
ওষুধ শিল্পের ক্ষতির প্রভাবের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কাস্টম এজেন্ট মাহাতাব উদ্দিন। তিনি জানান, চায়না, ভারত ও জার্মানি থেকে আমদানিকৃত ২০টি শিপমেন্টের প্রায় ৪–৫ হাজার কেজি কাঁচামাল আগুনে পুড়ে গেছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় এক লাখ মার্কিন ডলার। এসব কাঁচামাল দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি করতো।
এছাড়াও, পিটি গ্রুপের এজিএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গার্মেন্টস কারখানার জন্য প্রেরিত ১০টি শিপমেন্টের চার থেকে পাঁচ টন কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ পুড়ে গেছে। এর বাজার মূল্য প্রায় ৯–১০ কোটি টাকা।
আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সিভিল অ্যাভিয়েশন, বিজিবি ও পুলিশ-আনসার সদস্যরা কাজ করেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আগুনের কারণে দেশের গার্মেন্টস ও ওষুধ শিল্পে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে এবং বহু প্রতিষ্ঠান বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।












