ঢাকা, ১৮ অক্টোবর ২০২৫:
“রক্ত দিতে হলে আমরা সামনে থাকি, কিন্তু ক্ষমতায় গেলে আমাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না”— এই মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন,
“ দেশে দেখা একমাত্র দৃশ্যমান সংস্কার হলো ছবিতে যা দেখছেন। রক্ত দিতে হলে আমরা সামনের সারিতে থাকব, কিন্তু ক্ষমতার প্রশ্ন এলে আমাদের খুঁজেও পাবেন না। আবার বলছি!”
পোস্টের সঙ্গে যুক্ত করা একটি কোলাজে দেখা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একটি ছবিতে হাসনাত আব্দুল্লাহ, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও নেতা সারজিস আলমসহ আন্দোলনের সময়কার শীর্ষ নেতারা রয়েছেন। অপর ছবিতে ‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যান্য দলের নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে থাকার চিত্র ফুটে উঠেছে—যেখানে অনুপস্থিত এনসিপি।
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান বর্জন করল এনসিপি
এর আগে ১৭ অক্টোবর রাত ২টা ৪ মিনিটে, এনসিপির মিডিয়া গ্রুপে এক ঘোষণায় জানানো হয় যে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে না। এ ঘোষণা দেন দলটির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন।
ঘোষণায় বলা হয়,
“এনসিপির মতে, এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আইনি কোনো ভিত্তি অর্জিত হবে না। এটি শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই থাকবে। আইনি ভিত্তি নিশ্চিত হওয়ার আগে এ ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’-এর মতো একপক্ষীয় দলিলে পরিণত হবে।”
এনসিপি জানায়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে এবং কমিশনের পরবর্তী প্রক্রিয়ায় তারা অংশগ্রহণ করবে। দাবি পূরণ হলে তারা পরবর্তীতে স্বাক্ষর প্রক্রিয়ায় যোগ দেবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও প্রতিক্রিয়া
হাসনাত আব্দুল্লাহর বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তৃণমূল স্তর থেকে উঠে আসা নেতাদের হতাশা ও বঞ্চনার প্রতিচ্ছবি হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখা সত্ত্বেও অনেক দল এবং ব্যক্তি রাজনৈতিক ফলাফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপির এই অবস্থান বড় জোটের জন্য চাপ বাড়াবে, বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনে যারা জাতীয় ঐকমত্য ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছিল।










