২০২৬ সালে জুনিয়র পর্যায়ে শুরু হবে এই নতুন সংস্করণ; ম্যাচে থাকবে ৪ ইনিংস, চালু হবে ‘আর্লি কলাপ্স ক্লজ’ ও এআই-ভিত্তিক স্কাউটিং সিস্টেম
স্পোর্টস ডেস্ক | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
ক্রিকেটের পরিচিত তিন ফরম্যাট—টেস্ট, ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টির বাইরে এবার যুক্ত হচ্ছে নতুন আরেক ফরম্যাট—‘টেস্ট-টোয়েন্টি’। টেস্টের কৌশল আর টি-টোয়েন্টির গতি ও উত্তেজনা একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি এই নতুন ধারার ক্রিকেটে একদিনে হবে ৮০ ওভারের খেলা, যেখানে থাকবে চারটি ইনিংস।
‘ওয়ান ওয়ান সিক্স নেটওয়ার্ক’-এর আয়োজনে এবং ক্রীড়া উদ্যোক্তা গৌরব বাহিরওয়ানির নেতৃত্বে শুরু হচ্ছে এই উদ্যোগ, যার প্রথম আসর মাঠে গড়াবে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে।
কী এই ‘টেস্ট-টোয়েন্টি’?
নামের মধ্যেই রয়েছে ধারণা—টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির সংমিশ্রণ। নতুন এই ফরম্যাটে:
- প্রতিটি দল দুই ইনিংসে ব্যাট করবে, ২০ ওভার করে
- ম্যাচে থাকবে মোট ৮০ ওভার, একদিনেই শেষ হবে পুরো খেলা
- ফলাফল হতে পারে জয়, পরাজয়, টাই বা ড্র
- ড্র হলে হবে সুপার ওভার
নতুন কিছু নিয়ম
- পাওয়ারপ্লে: প্রতি দল একবার নিতে পারবে, ৪ ওভারের জন্য
- ফলো–অন: ব্যবধান মাত্র ৭৫ রান
- আর্লি কলাপ্স ক্লজ: প্রতিপক্ষকে ১০ ওভারের কমে অলআউট করলে পাওয়া যাবে ৩ অতিরিক্ত ওভার
- বোলিং সীমা: একজন বোলার সর্বোচ্চ ৮ ওভার করতে পারবেন, দুই ইনিংসে ভাগ করে
- ম্যাচ চলবে একদিন, তবে থাকবে টেস্টের কৌশল ও গভীরতা
প্রথম আসর: জুনিয়র টেস্ট-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ
- শুরু: জানুয়ারি ২০২৬
- বয়সসীমা: ১৩–১৯ বছর
- ভেন্যু: ভারত
- অংশ নেবে ৬টি ফ্র্যাঞ্চাইজি দল:
- দুবাই, লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্র, এবং ভারতের তিনটি শহর
- দ্বিতীয় মৌসুম থেকে নারী ক্রিকেটাররাও অংশ নিতে পারবেন
এআই দিয়ে খেলোয়াড় নির্বাচন
- ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা (বাংলাদেশ সময়) থেকে শুরু খেলোয়াড় নিবন্ধন
- থাকবে ‘এআই ডিসকভারি ইঞ্জিন’, যা তৈরি করবে ১০০০ জনের প্রাথমিক তালিকা
- পরে ৩০০ জনকে নেয়া হবে ‘গ্লোবাল অকশন পুল’-এ
- প্রতিটি দল গঠন হবে ১৬ জন করে খেলোয়াড় নিয়ে—৮ ভারতীয় + ৮ বিদেশি
উদ্দেশ্য: ভবিষ্যতের ক্রিকেটার গড়া
সংগঠনের প্রধান গৌরব বাহিরওয়ানি বলেন,
‘এটা শুধু একটা লিগ নয়, আমরা ক্রিকেটে একটি নতুন ইকোসিস্টেম তৈরি করছি। এনসিএএ বাস্কেটবলের মতো, এই প্ল্যাটফর্ম তরুণ প্রতিভা গড়বে।’
কারা আছেন পেছনে?
এই নতুন ফরম্যাটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ক্রিকেটের কিংবদন্তিরা:
- এবি ডি ভিলিয়ার্স (দক্ষিণ আফ্রিকা)
- স্যার ক্লাইভ লয়েড (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
- ম্যাথু হেইডেন (অস্ট্রেলিয়া)
- হরভজন সিং (ভারত)
এবি ডি ভিলিয়ার্স বলেন,
‘টেস্ট-টোয়েন্টি টেস্ট ক্রিকেটকে প্রতিস্থাপন নয়, বরং নতুন প্রজন্মের জন্য এটি পুনরায় কল্পনা করার প্রচেষ্টা।’
ক্লাইভ লয়েডের মতে,
‘এটা কেবল খেলার রূপ বদলাচ্ছে না, ক্রিকেটের শিল্প ও ছন্দ ফিরিয়ে আনছে।’
🧾 সংক্ষেপে টেস্ট-টোয়েন্টি নিয়মাবলি
| বিষয় | বিস্তারিত |
|---|---|
| ম্যাচ দৈর্ঘ্য | ১ দিন (৮০ ওভার) |
| ইনিংস | প্রতি দল ২ ইনিংস (২০+২০ ওভার) |
| ফলাফল | জয়, পরাজয়, ড্র, টাই |
| ড্র হলে | সুপার ওভার |
| পাওয়ারপ্লে | ১বার, ৪ ওভার |
| ফলো–অন | ব্যবধান ৭৫ রান |
| আর্লি কলাপ্স ক্লজ | প্রতিপক্ষকে ১০ ওভারের কমে অলআউট করলে ৩ ওভার অতিরিক্ত |
| বোলার সংখ্যা | সর্বোচ্চ ৫ |
| ওভার প্রতি বোলার | সর্বোচ্চ ৮ (দুই ইনিংসে ভাগ করে) |
🎯 ভবিষ্যতের ক্রিকেট?
ক্রিকেটের ধারাবাহিক বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যখন টি–টোয়েন্টি ও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলো বিশ্বজুড়ে দাপটের সঙ্গে জায়গা করে নিচ্ছে, তখন ‘টেস্ট-টোয়েন্টি’ এক ব্যতিক্রমধর্মী প্রয়াস—যেটি টেস্টের ধৈর্য ও গভীরতা এবং টি-টোয়েন্টির গতিশীলতা ও উত্তেজনাকে একসূত্রে বেঁধে দিতে চায়।












