আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘদিনে’র অস্থিরতায় আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় ভূমিকা’র ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মি ও চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী’র সঙ্গে “গভীর আলোচনা” চলছে। তার এই বক্তব্যে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে-এটি কি কেবল কূটনৈতিক চাপ, নাকি সত্যিই সমঝোতার নতুন পথ খুলতে পারে?
হামাসকে সরাসরি বার্তা
ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় হামাসকে সতর্ক করেছেন—জিম্মিদে’র দ্রুত মুক্তি না দিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়বে। তিনি বলেছেন,
“হামাসে’র হাতে খুব বেশি জিম্মি অবশিষ্ট নেই। যখন সংখ্যা ১০ থেকে ২০ জনে নেমে আসে, তখন উদ্ধার অভিযান সহজ থাকে না, বরং তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।”
এই মন্তব্য ইঙ্গিত করছে, যুক্তরাষ্ট্রে’র কাছে জিম্মি পরিস্থিতি নিয়ে নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে।
ইসরায়েলের ভেতরে জনঅসন্তোষ
একই সময়ে ইসরায়েলে’র ভেতরেও ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। সাধারণ মানুষ যুদ্ধ বিরতি ও জিম্মি মুক্তির দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। ফলে গাজার ভেতরে সামরিক অভিযান চালানোতে ইসরায়েলি সরকারে’র ওপর চাপ আরও বেড়েছে। ট্রাম্পের বক্তব্যে সেই চাপের প্রতিফলনই স্পষ্ট হয়েছে।
ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশল
এটি নিছক মানবিক উদ্যোগ নাকি রাজনৈতিক কৌশল-এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মার্কিন রাজনীতিতে ট্রাম্প সবসময়ই ‘শক্তিশালী মধ্যস্থতাকারী’ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে চান। বিশেষ করে নির্বাচনী বছরে মধ্যপ্রাচ্যের সংকটকে কাজে লাগানো তার জন্য একটি কৌশলগত পদক্ষেপও হতে পারে।
সব জিম্মি মুক্তির আহ্বান
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ ট্রাম্প লিখেছেন,
“২, ৫ বা ৭ নয়-সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে।”
তার এ বক্তব্যে বোঝা যায়, আংশিক সমাধান নয়, বরং তিনি সর্বাত্মক সমাধান চান। তবে হামাস কতটা সাড়া দেবে, সেটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
সংকট সমাধানের সম্ভাবনা
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সম্পর্ক যেমন গভীর, তেমনি হামাসের ওপরও আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমশ বাড়ছে। এ অবস্থায় ট্রাম্পের মধ্যস্থতা’র প্রচেষ্টা গাজায় যুদ্ধবিরতি’র দিকে নিয়ে যেতে পারে। তবে বাস্তবতা হলো, হামাস ও ইসরায়েল দু’পক্ষই নিজেদে’র অবস্থানে অনড়—ফলে সমাধান আসবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।
👉 সব মিলিয়ে বলা যায়, ট্রাম্পের “গভীর আলোচনা” দাবি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন আশা’র আলো দেখালেও এর কার্যকারিতা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। এটি হয়তো একটি কূটনৈতিক চাপে’র অংশ, আবার হয়তো সত্যিই সংকট নিরসনে’র নতুন অধ্যায়।










