চট্টগ্রাম প্রতিনিধি │ ২৭ অক্টোবর ২০২৫
চট্টগ্রামের রাউজানে যুবদলকর্মী মুহাম্মদ আলমগীর আলমকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার সময় তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আলমগীরের সঙ্গে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে জড়িত একটি পক্ষই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় নিহতের স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন।
নিহত আলমগীর আলম চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিভিন্ন মামলায় প্রায় ১২ বছর কারাভোগের পর গত ৫ আগস্ট তিনি পুনরায় রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
🔴 হত্যার আগে প্রকাশিত হুমকির ভিডিও
আলমগীরের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, তিনি কয়েকজনের কাছ থেকে জীবননাশের হুমকি পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন।
এক ভিডিওতে আলমগীরকে বলতে শোনা যায়,
“আমাকে এক মাস ধরে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমাকে মারবে বখতিয়ার ফকির, আলাউদ্দিন, হেলাল। আমি মরলে দায় ওদের। আমি নিরাপত্তা চাই, বউ-বাচ্চা নিয়ে বাঁচতে চাই।”
অন্য একটি ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে আলমগীরকে সতর্ক করে বলতে শোনা যায়, “আপনার গ্রুপের মধ্যে বখতিয়ার ফকিরের লোক ঢুকিয়ে দেবে, তারপর আপনাকে খুন করবে।”
🗣️ পরিবারের অভিযোগ
হত্যাকাণ্ডের পর নিহতের স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন,
“আমার স্বামীকে খুন করার জন্য রায়হান বাহিনীকে ভাড়া করা হয়েছিল। ট্রাক দিয়ে পথ আটকে গুলি করে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় বখতিয়ার ফকির জড়িত।”
👮 পুলিশের বক্তব্য
চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন,
“হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত তা তদন্ত চলছে। নিহত আলমগীরের সঙ্গে যাদের বিরোধ ছিল এবং ভাইরাল ভিডিওগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এখনই সুনির্দিষ্ট কারণ বলা যাচ্ছে না।”
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্তকর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান,
“হত্যায় কারা জড়িত, তাদের শনাক্তে কাজ চলছে। নিহত আলমগীর যাদের নাম উল্লেখ করেছিলেন, তাদের সংশ্লিষ্টতা গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত
সূত্র: স্থানীয় সংবাদদাতা, দ্য ডেইলি স্টার, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, জাগো নিউজ










