আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ৯ অক্টোবর ২০২৫ | জাতিসংঘ, নিউইয়র্ক
তহবিল সংকট এবং মার্কিন অর্থায়নের অনিশ্চয়তার কারণে জাতিসংঘ আগামী মাসগুলোতে বিশ্বব্যাপী নয়টি শান্তিরক্ষা অভিযানে প্রায় ২৫ শতাংশ শান্তিরক্ষী এবং বেসামরিক কর্মী ছাঁটাই করবে। বুধবার (৮ অক্টোবর) জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতিসংঘের এক শীর্ষ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান,
“সামগ্রিকভাবে আমাদের প্রায় ১৩,০০০ থেকে ১৪,০০০ শান্তিরক্ষী সেনা ও পুলিশ প্রত্যাহার করতে হবে। এর সঙ্গে সঙ্গে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক কর্মী এবং সরঞ্জামও সরানো হবে।”
মার্কিন অর্থায়ন অনিশ্চিত
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে সবচেয়ে বড় অর্থদাতা দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যা বর্তমানে মিশনের মোট বাজেটের ২৬ শতাংশেরও বেশি প্রদান করে। এরপরেই রয়েছে চীন, যার অবদান প্রায় ২৪ শতাংশ।
তবে এই অর্থ অনুদান নয়, বরং জাতিসংঘের সদস্যপদ অনুযায়ী নির্ধারিত অবদান।
এক কর্মকর্তা জানান, ২০২৫ সালের জুলাইয়ে নতুন অর্থবছর শুরুর আগেই যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘকে ১.৫ বিলিয়ন ডলার দেনা ছিল। বর্তমানে তাদের মোট বকেয়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
মার্কিন পক্ষ জাতিসংঘকে জানিয়েছে, তারা শিগগিরই ৬৮০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করবে। তবে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন মিশন এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে তহবিল বাতিল
একটি কংগ্রেস বার্তার ভিত্তিতে জানা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার শান্তিরক্ষা তহবিল বাতিল করেছেন।
এছাড়া ২০২৬ সালের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাজেট পুরোপুরি বন্ধের প্রস্তাব করেছে হোয়াইট হাউস বাজেট অফিস। তারা দাবি করেছে, মালি, লেবানন এবং কঙ্গোতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম “ব্যর্থ হয়েছে”।
যেসব অঞ্চলে প্রভাব পড়বে
ছাঁটাইয়ের এই সিদ্ধান্তে নিচের নয়টি শান্তিরক্ষা মিশন সরাসরি প্রভাবিত হবে:
- দক্ষিণ সুদান
- গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো
- লেবানন
- কসোভো
- সাইপ্রাস
- মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র
- পশ্চিম সাহারা
- গোলান হাইটস (ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে)
- আবেই অঞ্চল (দক্ষিণ সুদান ও সুদানের যৌথ অঞ্চল)
(গল্পটি আপডেট করে অনুচ্ছেদ ১-এ পূর্বের “১১টি মিশন” থেকে সংশোধন করে “৯টি মিশন” করা হয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্য, ভারত ও পাকিস্তান সংক্রান্ত মিশনগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে।)
জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন,
“নগদ সংকটের মধ্যেও জাতিসংঘ ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে যাচ্ছে। এখন সময় হয়েছে আরও দক্ষতা ও খরচ নিয়ন্ত্রণের পথ খোঁজার।”
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা কার্যক্রম টিকিয়ে রাখতে জাতিসংঘ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।











