স্টাফ রিপোর্টার:
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে—এমনই দাবি করা হচ্ছে সাম্প্রতিক একটি বিবৃতিতে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রচারের প্রসঙ্গকে কেন্দ্র করে বর্তমানে দিল্লি-নিয়ন্ত্রিত অপতৎপরতা ও ষড়যন্ত্রের কথাও উঠে আসছে।
প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, গতকাল (বুধবার) রয়টার্স, এএফপি, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি বলেছিলেন—জুলাই গ্রেন্ড-ঘটনার জন্য ক্ষমা চাওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই; এবং যদি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যভাবে সরকার গঠন হয়, তখন তিনি দেশে না ফিরে বরং ভারতের মাটি থেকেই অবস্থান বজায় রাখবেন। এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেছেন যে নতুন সরকারকে নির্বাচনি বৈধতা থাকতে হবে এবং অনেক নেতাকর্মী যদি পরিবেশ অনুকূল না দেখে তাহলে ভোট বয়কট করার শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন।
এই সূত্রগুলোকে কেন্দ্র করে কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমালোক বলছেন, আন্তর্জাতিক সাক্ষাৎকারের প্রচার ও সময় নিয়ন্ত্রণ করে দিল্লি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তাদের দাবি—আসন্ন রায়ের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার বক্তব্য আন্তর্জাতিকভাবে ছড়িয়ে দিয়ে দেশীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে চাওয়া হচ্ছে। প্রকাশিত বিশ্লেষণে ভারতের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে নানা তত্ত্ব ও সম্ভাব্য অন্তর্ভুক্ত দল-গোষ্ঠীর অংশগ্রহণ সম্পর্কে কথাও বলা হচ্ছে।
রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত মাসগুলোতে—শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডে তার জন্য একটি রাজনৈতিক কার্যালয় স্থাপন, সীমান্ত সংক্রান্ত উদ্বেগ ও কয়েকটি ঘটনাকে নিয়েও কূটনৈতিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কয়েকজন শীর্ষ নেতা ও সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে এবং তাদের কিছু সংখ্যাই কলকাতায় বসে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমে জড়িয়ে রয়েছে—যেগুলো বাংলাদেশি নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ বা সমর্থকরা ক্ষতিকর বলে দেখেন।
রিপোর্টে মন্তব্য করা হয়, ভারতের নীতিনির্ধারকরা মনে করেছিলেন দীর্ঘমেয়াদে চাপের মুখে অন্তর্বর্তী সরকারের নীতি পরিবর্তিত হবে এবং আলোচিত গ্রাহ্যতা ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে; তবে রিপোর্টকারীদের পর্যবেক্ষণে তা এখন পর্যন্ত লক্ষ্যনীয় হয়নি। এছাড়া উল্লেখ আছে—ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাধীন ও ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির কারণে দিল্লির প্রত্যাশিত ফল না পাওয়া-ই এর একটি কারণ বলা হচ্ছে।
এই সমস্ত দাবিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দফতর, বিশ্লেষক এবং সংবাদমাধ্যমে আলোচনা চলছে। তবে এখানে যেসব অভিযোগ ও বক্তব্য উপস্থাপিত হয়েছে তা প্রধানত সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর বক্তব্য ও তত্ত্ব নির্ভর—সেগুলোকে তদন্ত বা স্বাধীন সূত্রে যাচাই করা প্রয়োজন থাকবে।










