স্টাফ রিপোর্টার:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষ আজ উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তায় ভুগছে— সবাই ভাবছে কী হবে, কী হতে পারে। বাংলাদেশের শত্রুরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রোপাগান্ডা ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে।
রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ঐতিহাসিক দিন। ১৯৭৫ সালে সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করা হয়। দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীরা তাকে বন্দি করে রেখেছিল। দেশপ্রেমিক সৈনিক ও জনগণ তাকে মুক্ত করে এনে নতুন ইতিহাস রচনা করে।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক ক্ষণজন্মা পুরুষ। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের পথে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। অথচ পরবর্তী পাঁচ বছর ছিল আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের ইতিহাস— একদলীয় শাসনব্যবস্থা ‘বাকশাল’ প্রতিষ্ঠা করে দেশকে দুর্নীতি, ব্যর্থতা ও দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দেয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭৫ সালের পর জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসন থেকে দেশকে বহুদলীয় গণতন্ত্রে ফিরিয়ে আনেন। তিনি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করেন এবং অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করেন। তার হাত ধরেই গার্মেন্টস শিল্প, প্রবাসী শ্রমবাজার ও রেমিট্যান্স খাত বিকশিত হয়। কৃষিতে খাল খনন, উচ্চফলনশীল বীজের প্রচলন এবং শিল্পে তিন শিফটে উৎপাদনের মাধ্যমে তিনি কর্মসংস্থানের নতুন যুগের সূচনা করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে হত্যা করা হলেও তার দর্শন আজও বেঁচে আছে। তার প্রদত্ত বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ কখনও পরাজিত হয়নি। বিএনপিও পরাজিত হয়নি— বারবার ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে।”
তিনি আরও বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্টের উত্তরসূরি তারেক রহমান প্রবাসে থেকেও জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতা গড়ে উঠেছিল, তারেক রহমান তা অব্যাহত রেখেছেন।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “৭ নভেম্বর আমাদের জাতীয় ও রাজনৈতিক জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এই দিনেই জেগে ওঠে জাতির চেতনা। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দর্শন ও আদর্শ সামনে রেখে আমরা এগিয়ে যাব গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের পথে।”










