“আল্লাহর পর বিচার নিষ্পত্তির প্রতিনিধি আপনি, আমি নির্দোষ”— ট্রাইব্যুনালে ইনু
স্টাফ রিপোর্টার | ঢাকা | ২ নভেম্বর ২০২৫
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
রোববার (২ নভেম্বর) বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইনুকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানা থেকে আসামির কাঠগড়ায় তোলা হয়। তার উপস্থিতিতেই প্রসিকিউশনের আনা অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়।
একপর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল ইনুকে বলেন, “আপনার বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আপনি দোষ স্বীকার করবেন কিনা জানান।” জবাবে ইনু বলেন, “আমি কয়েকটি অভিযোগ শুনেছি। তবে আমার আবেদনটি আপনারা আমলে নেন”নি।” ট্রাইব্যুনাল জানায়, তার আবেদনটি রিজেক্ট করা হয়েছে।
এরপর ইনু বলেন, “অনুমতি দিলে মাননীয় ট্রাইব্যুনালকে আমি দুটি কথা বলতে চাই।” কিন্তু প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এখানে অন্য কোনো কথা বলার সুযোগ নেই। তবুও ইনু বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা দুইবার বলেছেন দেশে গায়েবি মামলা হচ্ছে। আইন উপদেষ্টাও গায়েবি মামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আমি গায়েবি মামলার ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “সিএমএম কোর্টে আমার বিরুদ্ধে ৬০টি মামলা চলছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও গায়েবি অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার।”
চেয়ারম্যানের উদ্দেশে ইনুর বক্তব্য, “আল্লাহর পর বিচার নিষ্পত্তির প্রতিনিধি আপনি। আপনি ন্যায়বিচার করবেন। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।”
প্রসিকিউশনের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান। অন্যদিকে ইনুর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।
গত ২৮ অক্টোবর ইনুর অব্যাহতির আবেদন শোনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল আজকের দিন আদেশের জন্য নির্ধারণ করেছিল।
প্রসিকিউশন জানায়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় ইনুর কমান্ড রেসপনসিবিলিটি প্রমাণিত হয়েছে, কারণ আন্দোলন দমনে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগে ছিলেন।
গত বছরের ২৬ আগস্ট হাসানুল হক ইনুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে বিভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন ইনু। তবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জোটের প্রার্থী হিসেবে কুষ্টিয়া আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন তিনি।











