ঢাকা, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ঃ – ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে নতুন করে কোনো রিট শুনতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে হাইকোর্ট। আদালতে’র পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এ বিষয়ে ইতোমধ্যে আপিল বিভাগে রায় হয়েছে, তাই হাইকোর্টে নতুন রিটে’র কোনো সুযোগ নেই।
বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেন।
আদালতের ব্যাখ্যা ও আইনি অবস্থান
বাংলাদেশে’র বিচার ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ আদালতে’র রায়ই চূড়ান্ত। আপিল বিভাগ যখন ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে রায় দিয়েছে, তখন হাইকোর্টে একই বিষয়ে পুনরায় আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সিদ্ধান্তে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে’র মতো রাজনৈতিক ভাবে স্পর্শকাতর ইস্যুতে দীর্ঘ মেয়াদি আইনি জটিলতার পথ বন্ধ হলো।
ডাকসুর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
- প্রতিষ্ঠা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) গঠিত হয় স্বাধীনতা’র অনেক আগে থেকেই।
- ভূমিকা: এটি ছাত্রদে’র গণতান্ত্রিক অধিকার, আন্দোলন ও জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম।
- রাজনৈতিক উত্তরাধিকার: বাংলাদেশে’র জাতীয় রাজনীতির শীর্ষস্থানীয় নেতাদে’র বড় একটি অংশ ডাকসুর নেতৃত্ব থেকে উঠে এসেছেন।
- শেষ নির্বাচন: দীর্ঘ বিরতির পর ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে সেই নির্বাচন নিয়ে নানা বিতর্ক, বিক্ষোভ এবং রিটের সূত্রপাত হয়।
কেন এত বিতর্ক?
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে বরাবরই প্রশ্ন উঠেছে-
- ভোটগ্রহণে অনিয়ম,
- প্রার্থী বাছাইয়ে স্বচ্ছতার অভাব,
- বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা,
- ও ছাত্র সংগঠনগুলোর চাপ।
এসব কারণে নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে আদালতে রিট হয়। কিন্তু হাইকোর্ট এবার সেই রিট শোনার পথ বন্ধ করায় আইনি দিক থেকে নতুন অধ্যায় শুরু হলো।
শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
- শিক্ষার্থীরা: অনেকে মনে করছেন, আদালতের এই সিদ্ধান্ত নির্বাচনের পথে বাধা কমাবে। তবে অনেকে বলছেন, এতে ছাত্রদে’র অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ সীমিত হতে পারে।
- রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা: তাঁদের মতে, ডাকসু নির্বাচন শুধু ক্যাম্পাস রাজনীতি নয়, বরং জাতীয় রাজনীতি’র ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরির ক্ষেত্র। তাই এর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
ভবিষ্যতের দিগন্ত
আইনিভাবে পথ এখন পরিষ্কার-ডাকসু নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে আর কোনো মামলা চলবে না। ফলে দায়িত্ব এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ওপর। তাঁরা চাইলে নতুন করে নির্বাচন আয়োজন করতে পারেন, আর সেটিই ছাত্রসমাজে’র জন্য গণতান্ত্রিক চর্চা পুনরুজ্জীবনে’র সুযোগ হবে।











