আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সুতিয়া নিউজ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর জাতিসংঘে প্রথম ভাষণেই শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতার জন্য বৈশ্বিক সংস্থাটিকে দায়ী করেছেন। মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি জাতিসংঘকে উপহাস করেন এবং সংস্থাটির বিরুদ্ধে অবৈধ অভিবাসন উৎসাহিত করার অভিযোগ আনেন।
ট্রাম্প বলেন, “জাতিসংঘ পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে অভিবাসনের মাধ্যমে আক্রমণ করে যাচ্ছে । এর ফল শেষ করার সময় এসেছে। আপনার দেশগুলো ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে।”
জলবায়ু পরিবর্তনকে ‘প্রতারণা’ আখ্যা
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রতারণা উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, জাতিসংঘ কেবল কঠোর ভাষায় চিঠি পাঠায়, যা দিয়ে যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব নয়।
জাতিসংঘকে নিয়ে কটাক্ষ
৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ভাঙা এসকেলেটর ও খারাপ টেলিপ্রম্পটার নিয়েও তির্যক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “জাতিসংঘের কাছ থেকে আমি যা পেয়েছি তা হলো একটি ভাঙা এসকেলেটর আর একটি খারাপ টেলিপ্রম্পটার।”
রাশিয়া-ইউক্রেন ও গাজা প্রসঙ্গ
ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি সাতটি যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা করেছেন, তবে ইউক্রেন যুদ্ধ ও গাজা সংঘাতে কোনো সাফল্য পাননি। হামাসের কাছে তিনি জিম্মিদের মুক্তির আহ্বান জানান এবং যুক্তরাষ্ট্রের কিছু মিত্র দেশের ফিলিস্তিন স্বীকৃতিকে ‘হামাসের নৃশংস কর্মকাণ্ডের পুরস্কার’ হিসেবে আখ্যা দেন।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে তুলনামূলক নরম সুরে কথা বললেও তিনি নতুন কিছু মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত দেন। একই সঙ্গে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখায় ইউরোপীয় মিত্র, চীন ও ভারতকে সমালোচনা করেন।
জাতীয়তাবাদী নীতি ও সমালোচনা
দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুতেই ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ডব্লিউএইচও ও জাতিসংঘের জলবায়ু চুক্তি থেকে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন, বিদেশি সহায়তা কমিয়েছেন এবং বিদেশি বিচারকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
এ নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সহায়তা হ্রাস বিশ্বের জন্য ধ্বংস ডেকে আনছে।”
কূটনৈতিক বৈঠক
অধিবেশনের ফাঁকে ট্রাম্পের ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মাইলির সঙ্গেও নির্ধারিত বৈঠক রয়েছে, যেখানে অর্থনৈতিক সহায়তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
নিরাপত্তা সতর্কতা
অধিবেশনকে ঘিরে নিউইয়র্কে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস জানায়, জাতিসংঘের যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল করার জন্য রাষ্ট্র-সমর্থিত কিছু গোষ্ঠী এক লাখেরও বেশি মোবাইল সিমকার্ড ব্যবহার করে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা চালিয়েছিল, তবে তা ব্যর্থ করা হয়েছে।











